E-BOOK
Change Your Lifestyle

how to build immune system naturally

Boost your immune system naturally with a balanced diet, regular exercise, enough sleep, stress management, and natural supplements. Stay healthy and strong and Remember, consistency is key! Here are some effective ways and describe to enhance your immunity.

ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কি ?

ইমিউন সিস্টেম হল অঙ্গ, কোষ এবং প্রোটিনের একটি জটিল নেটওয়ার্ক যা শরীরের নিজস্ব কোষগুলিকে রক্ষা করার সাথে সাথে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লরাই করে শরীরকে রক্ষা করে। ইমিউন সিস্টেম প্রতিটি জীবাণুর (অণুজীব) সংবদ্ধ করে রাখে যা কখনও পরাজিত হচ্ছে এমন কিছু শরীরে প্রবেশ করলে জীবাণুটিকে দ্রুত চিনতে এবং ধ্বংস করতে পারে। অর্থাৎ কোষ, টিস্যু, অঙ্গ এবং তারা যে পদার্থগুলি তৈরি করে তার একটি জটিল সংযুক্ত দল যা শরীরকে সংক্রমণ এবং অন্যান্য রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। কারণ সুস্থ থাকার জন্য এটি আপনার সবচেয়ে আগে প্রয়োজন শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হলে তা বিভিন্ন রোগ-জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করতে পারবে। ফলে আপনার সুস্থ থাকা সহজ হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সবার আগে আপনার খাবারের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ভেজাল খাদ্য ও প্রক্রিয়াজাত করা খাবারের প্রভাবে ধীরে ধীরে কমে যায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ফলে সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় শরীর। অল্প পরিশ্রমেই শরীর ও মনে আসে ক্লান্তি। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভাস।

ইমিউন সিস্টেমের ৭ টি অঙ্গ

এই অঙ্গগুলির মধ্যেই ইমিউন সিস্টেমের কোষগুলি জীবাণু এবং বাহিরের পদার্থের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কাজ করে।

  • এডিনয়েড – নাসিকা গহবরে অবস্থিত দুটি গ্রন্থি।
  • অস্থ্যি মজ্জা – অস্থি মজ্জা হাড়ের ভিতরে পাওয়া একটি স্পঞ্জের মতো টিস্যু।
  • থাইমাস – থাইমাস হার্টের উপরে স্তনের হাড়ের পিছনে অবস্থিত।
  • লিম্ফ নোড – সাধারণত ঘাড়, কুঁচকি এবং বগলে অবস্থিত।
  • প্লীহা – পাঁজরের নীচে পেটের উপরের বাম অংশে পাওয়া যায়।
  • টনসিল – মানুষের গলার পিছনের উভয় পাশে অবস্থিত।
  • মিউকাস মেমব্রেন- মুখের ভেতর নরম যে আবরণ থাকে।

ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা কেনো গুরুত্বপূর্ণ

ইমিউন সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে কেননা এটি আপনার শরীরকে ক্ষতিকারক পদার্থ, জীবাণু এবং কোষের পরিবর্তন থেকে রক্ষা করে যেসব পদার্থ আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনার ইমিউন সিস্টেম মসৃণভাবে চলছে, ততক্ষন পর্যন্ত আপনি অসুস্থতা অনুভব করবেন। এটি ঠান্ডা এবং ফ্লো ভাইরাস থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো গুরুতর অবস্থা পর্যন্ত সমস্ত কিছুর সাথে লড়াই করতে সক্ষম।

ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেন দুর্বল হয়

ধূমপান, অ্যালকোহল এবং অপুস্টি জাতীয় খাবার গ্রহন, যা শ্বেত রক্তকণিকাকে ধ্বংস করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে দেয় ফলে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সংক্রমণের কারণে গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন যা বেশিরভাগ লোকই প্রতিরোধ করতে পারে প্রাকৃতিক পুস্টি জাতীয় খাবারের মাধ্যমে।

কিভাবে জানবেন আপনার ইমিউন সিস্টেম দুর্বল

দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন সর্দি, সংক্রমণ, হজমের সমস্যা, বিলম্বিত ক্ষত নিরাময়, ত্বকের সংক্রমণ, ক্লান্তি, অঙ্গের সমস্যা, বিলম্বিত বৃদ্ধি, রক্তের ব্যাধি।

কিভাবে ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বারানো যায়

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পুস্টি জাতীয় খাবার। এসব খাবারের ভালো পছন্দের মধ্যে রয়েছে সাইট্রাস (টক জাতীয়) ফল, ব্রোকলি বা সবুজ ফুলকপি, পালংশাক, বাদাম, পেঁপে, আদা, গাজর, টমেটো, সবুজ চা (Green Tea)। যদিও এটি মনে রাখা উত্তম যে একটি ডায়েট প্লান আমাদের সুস্থ রাখতে পারে না। প্রয়োজন ব্যায়াম করা, ওজন বজায় রাখা এবং ধূমপান ও উচ্চ অ্যালকোহল গ্রহণের মতো অভ্যাস ত্যাগ করাও অপরিহার্য।

প্রাকৃতিক কিছু উৎস, যা হতে পাওয়া যায় ইমিউন সিস্টেম উন্নত করার পুস্টি উপাদান

  • আদা
  • রসুন
  • টারমারিক (কাচা হলুদ)
  • মধু
  • দই
  • মিস্টি আলু
  • আলমন্ডস্ (কাঠ বাদাম)
  • বাদাম
  • ডালিম
  • বেরি ফল
  • পেঁপেঁ
  • গাজর
  • পালংশাক
  • গ্রীন টি
  • ব্লোবেরী ফল
  • সাইট্রাস ফল (মাল্টা, কমলা, জাম্বুরা, আমড়া, লেবু)
  • সানফ্লায়োর সিডস (সূর্য্যমুখী ফুলের বীজ)
  • ব্রুকলি (সবুজ ফুলকপি)
  • ডার্ক চকলেট

ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হলে ছোট বড় কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা হতে সময়ের আবর্তনে কিছু দীর্ঘ মেয়াদি রোগ দেখা দেয় যা হলো

  • পলিউরিয়া বা ডায়াবেটিস
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • উচ্চ কোলেস্টেরল
  • এলার্জি
  • একজিমা
  • গ্যাস্ট্রিক

  • ক্যান্সার

উচ্চ রক্ত চাপ

উচ্চ রক্তচাপ একটি সাধারণ অবস্থা যা শরীরের ধমনীকে প্রভাবিত করে। একে হাইপারটেনশনও বলা হয়। উচ্চ রক্ত চাপ থাকলে ধমনীর যে দেয়াল আছে সেই দেয়ালের বিরুদ্ধে রক্তের ধাক্কা লাগার শক্তি ধারাবাহিকভাবে খুব বেশি হয়ে যায়। তাই হৃৎপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করতে বেশি পরিশ্রম করতে হয়।

সারাবিশ্বের মতো ১৭ মে দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তত্ত্বাবধানে ওয়ার্ল্ড হাইপারটেনশন লীগ ও ইন্টারন্যাশনাল হাইপারটেনশন সোসাইটি এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে, ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন’।

রক্তচাপ (Blood Pressure) পারদের মিলিমিটারে পরিমাপ করা হয় (মিমি Hg)। সাধারণভাবে, উচ্চ রক্তচাপ হল রক্তচাপ 130/80 মিলিমিটার পারদ (মিমি Hg) বা তার বেশি।

আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন রক্তচাপকে চারটি সাধারণ বিভাগে ভাগ করে। আদর্শ রক্তচাপ স্বাভাবিক হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।

রক্তচাপ  কত প্রকার?

রক্তচাপ সাধারণত দুই ধরনের –

১) সিস্টোলিক – সিস্টোলিক ১০০ থেকে ১৪০
২) ডায়াস্টলিক – ডায়াস্টলিক ৬০ থেকে ৯০ মি.মি মার্কারি

উচ্চ রক্তচাপ বুঝার উপায়

মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বুক ধড়ফড় করা এরকম কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। কিন্তু যদি কারো রক্তচাপ ১৪০/৯০ মিলিমিটার মার্কারি বা তারচেয়ে বেশি হয় এক্ষেত্রে বুঝতে হবে তার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে। বয়সভেদে এ মাত্রা কিছু কম অথবা বেশি হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপের কারন সমূহ

শতকরা ৯০ ভাগ রোগীর উচ্চ রক্তচাপের কোন নির্দিস্ট কারণ জানা যায় না, একে প্রাইমারী বা এসেন্সিয়াল রক্তচাপ বলে। সাধারণত বয়স্ক মানুষের উচ্চ রক্তচাপ বেশী হয়ে থাকে। কিছু কিছু বিষয় উচ্চ রক্তচাপের ঝুকি বাড়ায়, যেমনঃ

  • বংশানুক্রমিক – উচ্চ রক্তচাপের বংশগত ধারাবাহিকতা আছে, যদি বাবা-মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকে তবে সন্তানেরও উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি নিকটাত্মীয়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকলেও অন্যদের রক্তচাপের ঝুঁকি থাকে।
  • ধুমপান – ধুমপায়ীদের শরীরে তামাকের নানা রকম বিষাক্ত পদার্থের প্রতিক্রিয়ায় উচ্চ রক্তচাপসহ ধমনী, শিরার নানা রকম রোগ ও হৃদরোগ দেখা দিতে পারে। তামাক, জর্দা, গুল ব্যবহারে একই সমস্যা হতে পারে।
  • অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ – খাবার লবণে সোডিয়াম থাকে যা রক্তের জলীয় অংশ বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তের আয়তন বেড়ে যায় এবং রক্ত চাপও বেড়ে যায়। তাই সাদা বা কাচা লবণ খাওয়া পরিহার করতে হবে।
  • অধিক ওজন এবং অলস জীবনযাত্রা – যথেষ্ঠ পরিমানে ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরে ওজন বেড়ে যেতে পারে। এতে হৃদযন্ত্রকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয় এবং এর ফলে অধিক ওজন সম্পন্ন লোকদের উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে।
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস – অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, যেমন মাংস, মাখন এবং ডুবা তেলে ভাজা খাবার খেলে ওজন বাড়বে। কলিজা, গুর্দা, মগজ এসব খেলে রক্তে কোলেষ্টরল বেড়ে যায়। রক্তে অতিরিক্ত কোলেষ্টরল হলে রক্তনালীর দেয়াল মোটা ও শক্ত হয়ে যায়। এর ফলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত মদ্যপান – যারা নিয়মিত অত্যাধিক পরিমাণে মদ্যপান করে, তাদের উচ্চ রক্তচাপ বেশী হয়। অ্যালকোহলে অতিরিক্ত ক্যালরী থাকে, এর ফলে ওজন বেড়ে যায় এবং এতে রক্তচাপ বেড়ে যায়।
  • ডায়াবেটিস – ডায়াবেটিস রোগীদের অথারোসক্লেরোসিস বেশী হয়। ফলে বয়সের সাথে সাথে ডায়াবেটিস রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। এছাড়া তাদের অন্ধত্ব ও কিডনীর নানা রকম রোগ হতে পারে।
  • অতিরিক্ত উৎকণ্ঠা – অতিরিক্ত রাগ, উত্তেজনা, ভীতি, দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপের কারনেও রক্তচাপ সাময়িকভাবে বেড়ে যেতে পারে। যদি এই মানসিক চাপ অব্যাহত থাকে এবং রোগী ক্রমবর্ধমান মানসিক চাপের সংঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারেন, তবে এই উচ্চ রক্তচাপ স্থায়ী রূপ নিতে পারে।

অন্যান্য কারণসমূহঃ

কিছু কিছু অঙ্গ আক্রান্ত হলে রোগের কারনে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া গেলে একে বলা হয় সেকেন্ডারী হাইপারটেনশন। এই কারণ গুলির মধ্যে কয়েকটি হলোঃ

  • কিডনীর রোগ।
  • অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি ও পিটুইটারী গ্রন্থির টিউমার।
  • ধমনীর বংশগত রোগ।
  • গর্ভধারণ অবস্থায় এ্যাকলাম্পসিয়া ও প্রি-এ্যাকলাম্পসিয়া হলে।
  • অনেকদিন ধরে জন্মনিয়ন্ত্রনের বড়ির ব্যবহার, স্টেরয়েড গ্রহণ এবং ব্যাথা নিরামক কিছু কিছু ঔষধ সেবন করলে।

উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে করনীয়

জীবন যাত্রার পরিবর্তন এনে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। বংশগতভাবে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা কমানো সম্ভব না। তবে এরকম ক্ষেত্রে যে সব উপাদান নিয়ন্ত্রন করা যায়, সেগুলোর ব্যাপাবে বেশী মনোযোগী হওয়া উচিৎ।

  • অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে।
  • খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রন করতে হবে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম ও কায়িক পরিশ্রম করতে হবে।

খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতাঃ কম চর্বি ও কম কোলেষ্টেরল যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন খাশি বা গরু গোস্ত, কলিজা, মগজ, গিলা, গুর্দা,  কম খেতে হবে। কম তেলে রান্না করা খাবার এবং ননী তোলা দুধ, অসম্পৃক্ত চর্বি যেমন সয়াবিন, ক্যানোলা, ভুট্টার তেল অথবা সুর্য্যমুখীর তেল খাওয়া যাবে। বেশী আশযুক্ত খাবার গ্রহন করা ভালো।  আটার রুটি এবং সুজী জাতীয় খাবার পরিমান মত খাওয়া ভালো।

লবণ নিয়ন্ত্রণঃ তরকারিতে প্রয়োজনীয় লবনের বাইরে অতিরিক্ত লবণ পরিহার করতে হবে।

মদ্যপানঃ অতিরিক্ত মদ্যপান পরিহার করতে হবে।

নিয়মিত ব্যায়ামঃ সকাল-সন্ধ্যা হাটাচলা, সম্ভব হলে দৌড়ানো, হালকা ব্যায়াম, লিফটে না চড়ে সিড়ি ব্যবহার ইত্যাদি।

ধুমপান বর্জনঃ ধুমপান অবশ্যই বর্জনীয়। ধুমপায়ীর সংস্পর্শ থেকে দুরে থাকুন। তামাক পাতা, জর্দ্দা, গুল লাগানো ইত্যাদিও পরিহার করতে হবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ যাদের ডায়াবেটিস আছে, তা অবশ্যই নিয়ন্ত্রন করতে হবে। 

মানুসিক ও শারীরিক চাপ সামলাতে হবেঃ নিয়মিত বিশ্রাম, সময় মতো ঘুমানো, শরীরকে অতিরিক্ত ক্লান্তি থেকে বিশ্রাম দিতে হবে। নিজের সখের কাজ করা, নিজ ধর্মের চর্চা করা ইত্যাদির মাধ্যমে মানসিক শান্তি বেশী হবে।

রক্তচাপ নিয়মিত পরীক্ষাঃ নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রক্তচাপ পরীক্ষা করানো উচিৎ। যত আগে উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে, তত আগে নিয়ন্ত্রন করা যায় এবং জটিলতা হতে রক্ষা পাওয়া যায়।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কী খাবেন

  • প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় প্রচুর শাকসবজি যেমন পালংশাক, ফুলকপি, শসা, লাউ, মটরশুঁটি, কলমি শাক, বাঁধাকপি, টমেটো, কুমড়া, বেগুন ইত্যাদি রাখতে হবে। শাকসবজি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
  • পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কলা, ডাবের পানি, টমেটো ইত্যাদিতে পটাশিয়াম থাকে। অ্যাভোকাডো, রঙিন আলু, স্যামন ও  টুনা মাছ, বাদাম, দই-এর মতো খাবার রাখুন। ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করুন।
  • উচ্চ রক্তচাপের জন্য পটাসিয়াম একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কলা, অ্যাভোকাডো, টমেটো, রঙিন আলু, স্যালমন ও  টুনা মাছ, বাদাম, দই-এর মতো খাবার রাখুন। ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করুন।
  • এ ছাড়া ফলমূল যেমন আমলকি, নাশপতি, পেঁপে, বেদানা, পেয়ারা এগুলোর মধ্যে যেকোনো এক ধরনের ফল প্রতিদিন গ্রহণ করা যেতে পারে।  
  • তৈলাক্ত মাছ পরিহার করে অন্য ছোট মাছ খেতে হবে।
  • এক কাপ দুধ খাওয়া যেতে পারে প্রতিদিন।

কোলেস্টেরল

কোলেস্টেরল প্রাণীদেহের প্রতিটি টিস্যুতে উপস্থিত এক ধরনের ফ্যাট, যা শারীরবৃত্তীয় কাজে প্রয়োজন হয়। কোলেস্টেরল মানুষের রক্তের প্রোটিনের সঙ্গে মিশে লিপোপ্রোটিন তৈরি করে রক্তে প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্টেরয়েড জাতীয় উপাদানের অগ্রদূত হিসেবেকাজ করে। শরীরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল শরীরের জন্য ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।

কোলেস্টেরল ২ ধরনের

  1. LDL (এলডিএল)
  2. HDL( এইচডিএল)

1. LDL: এলডিএল হচ্ছে লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন অর্থাৎ কম ঘনত্বযুক্ত লিপোপ্রোটিন বা খারাপ কোলেস্টেরল। এলডিএল ধমনির দেয়ালে ক্ষতিকর প্লাক তৈরিতে সাহায্য করে, তাই একে খারাপ কোলেস্টেরল বলা হয়। এটি রক্তবাহী নালীগুলোতে জমে গিয়ে রক্তনালীকে সংকুচিত  করে ফেলে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। রক্তে লিপোপ্রোটিন অর্থাৎ ফ্যাটের পরিমাণ অনেক বেশি হলে সেটাকে হাই কোলেস্টেরল বলে। হাই কোলেস্টেরল মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায়। এটির কারণে হৃদপিণ্ডে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হতে পারে। কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার বিভিন্ন কারণের মধ্যে অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার, ওভার ওয়েট এবং ইনঅ্যাকটিভ ফিজিক্যাল লাইফস্টাইল গুরুত্বপূর্ণ। রক্তে এলডিএলের স্বাভাবিক মাত্রা হলো কমপক্ষে ১০০ মিলিগ্রাম পার ডিএল। এইচডিএলের স্বাভাবিক মাত্রা ৪০ থেকে ৬০ বা তার বেশি মিলিগ্রাম পার ডিএল।

2. HDL: এইচডিএল হচ্ছে হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন অর্থাৎ বেশি ঘনত্বযুক্ত লিপোপ্রোটিন শরীরের জন্য উপকারী। এটি ধমনির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় এলডিএল কোলেস্টেরলকে সরিয়ে দিতে সাহায্য করে এবংএই কোলেস্টেরল আমাদের কোষঝিল্লির তরলতা বজায় রাখে, পিত্তরস তৈরি করে, কিছু গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরি করতে ভূমিকা রাখে।

কোলেস্টেরল এর ফলে কি কি সমস্যা হতে পারে

রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলেও অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হতে পারে। যা থেকে স্ট্রোকের ঝুঁকি বারে এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোকসহ বিভিন্ন ধরনের ধমনী রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি।

রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে যে সব সমস্যা হতে পারে

ত্বকের সমস্যাঃ এলডিএল খুব বেশি হলে তা ত্বকেও প্রভাব ফেলবে এবং এগুলো ফুসকুড়ির মতো জমে যায় যা দেখতে  হলুদ বা কমলা পিণ্ডের মতো। এই ত্বকের সমস্যা অনেক জায়গায় হতে পারে। চোখের কোণে, হাতের রেখায় বা পায়ের পিছনে।

অকেজো রক্তনালীঃ রক্তনালীতে চর্বিগুলোর দেয়ালে বাসা বাধে। যার পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে নালী দিয়ে রক্ত প্রবাহ সম্পূর্ণভাবে কমে যায়। এমনকি এটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

নখের মৃত্যুঃ রক্তনালী প্রধানত শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত পরিবহন করে। যখন এটি রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে অর্থাৎ অঙ্গটিতে সঠিকভাবে রক্ত ​​গ্রহণ করে না তখন স্থানটি ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে যায়। আর এটা নখ দিয়ে ঠিকমতো রক্ত না পড়লে তা খালি চোখে দেখা যায়। নখ কালো হয়ে যায়।

চোখে হলুদ স্তরঃ অতিরিক্ত এলডিএল চোখের চারপাশেও জমতে পারে। চোখের পাতার উপরে বা নীচে। ফোলা ঘন এবং হলুদ রঙের হয়। একে জ্যান্থেলাসমা বলা হয়। অবশ্য এটি ডায়াবেটিস বা থাইরয়েডের সমস্যার কারণেও হতে পারে।

মৃত্যুর ঝুঁকিঃ সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হৃদরোগ। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আবার, এটি মস্তিষ্কের সাথে সংযুক্ত রক্তনালীতে জমা হতে পারে। তাহলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমে যাবে এমনকি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এর ফলে স্ট্রোক করার সম্ভবনা বেড়ে যায়।

যে খাবার আপনাকে দিবে মুক্তি

Fenugreek Water: মেথি রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় এবং খালি পেটে মেথি খেলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমায়।তাই খালি পেটে গরম পানিতে একটু মেথি পাউডার মিশিয়ে খেলে তা শরীর কে দেবে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি।

Basil Leaves: তুলসী পাতা শুধু চিবানো নয়, রসও পান করা যায়। এর রসে রয়েছে ইউজেনল যা উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং হার্টকে সুস্থ রাখে।

Garlic & Onion: রসুনে থিয়ামিন (ভিটামিন বি১), রিবোফ্লাবিন (ভিটামিন বি২), নায়াসিন (ভিটামিন বি৩), প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি৫), ভিটামিন বি৬, ফোলেট (ভিটামিন বি৯) ও সেলেনিয়াম আছে। সেলেনিয়াম ক্যানসার প্রতিরোধে দারুণ কাজ করে। রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।যা পেঁয়াজে পাওয়া যায় ‘Quercetin’ নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হার্ট ও রক্ত সুস্থ রাখে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভালো অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে। এটি কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে। পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন বি এবং পটাশিয়াম যা শরীরকে সচল রাখতে সাহায্য করে।রক্ত পরিশোধন করে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।ফলে হৃদরোগ ও উচ্চরক্তচাপ প্রতিরোধ করে।

Pomegranate: খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়।

Orange Juice: কমলালেবুতে থাকা সাইট্রাস বৈশিষ্ট্য আপনার শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমায়।

Green Tea: গ্রিন টি-তে থাকা ক্যাটেচিন এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

Tomato Juice: টমেটো জুস খুব সহজেই ঘরেই তৈরি করা যায়। এটি সহজেই রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

Yellow Milk: হলুদে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে। এছাড়া এতে থাকা কারকিউমিন রক্ত জমাট বাঁধতে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই এখন শুধু দুধ নয় এর সাথে এক চামচ হলুদ মিশিয়ে নিন।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড-জাতীয় খাদ্যঃ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে দুর্ভাগ্যবশত অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে এই খাবার খাই না। এখন বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ব্যবহার করা হয়। শিমজাতীয় খাদ্য, ওয়ালনাট, জলপাই ইত্যাদির মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়।

অপ্রক্রিয়াজাত দানাজাতীয় খাবারঃ সব ধরনের অপ্রক্রিয়াজাত দানাজাতীয় খাবারে ভিটামিন বি ও মিনারেলস রয়েছে। এগুলো চর্বি ও কোলেস্টেরল কমায়। এ ধরনের খাদ্য যেমনঃ রুটি, গম, ভুট্টা, ওটমিলস ইত্যাদি। ওটস-এর মধ্যে রয়েছে হাই সলিউবল ফাইবার যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর।

ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিসে এর পূর্ব সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

২৩০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে গ্রিক চিকিৎসক অ্যাপোলিনিয়াস অব মেমফিস ডায়াবেটিস শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। রোমান সাম্রাজ্য এর সময় এই রোগটিকে বিরল ভাবা হতো। সে-সময়ের প্রখ্যাত গ্রিক চিকিৎসক গ্যালেন মন্তব্য করেন যে, তিনি তাঁর সমগ্র পেশাগত জীবনে মাত্র দুইজন এরূপ রোগী দেখেছেন। গ্যালেন এই রোগের নাম দিয়েছিলেন মূত্রের ডায়রিয়া (Diarrhea Urine)

সুশ্রুত ও চরক নামে দুজন ভারতীয় চিকিৎসক ৪০০-৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে প্রথমবারের মতো লক্ষ্য করেন যে, ডায়াবেটিক রোগীদের প্রস্রাব মিষ্টি। তারাই প্রথমবারের মতো দুই ধরনের ডায়াবেটিসকে পৃথক অবস্থা হিসেবে শনাক্ত করেন। সুশ্রুত ও চরক বর্ণনা করেন যে, অলস, মোটা, অতিভোজী ব্যক্তি এবং যারা মিষ্টি ও চর্বি জাতীয় খাদ্য বেশি খেত তাদের মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যেত। অতিস্থুল ব্যক্তির জন্য শারীরিক ব্যা‌য়াম ও শাক-সবজি ছিল চিকিৎসার প্রধান অবলম্বন।

ডায়াবেটিস আনুমানিক ১৫০০ খ্রিষ্টাব্দের একটি মিশরীয় পান্ডুলিপিতে এই রোগটি প্রচুর পরিমাণ মূত্র নির্গমন হিসেবে উল্লেখ পাওয়া যায়। এবার্স প্যাপাইরাসে এরূপ ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া আছে।প্রথম যে রোগীর বর্ণনা পাওয়া যায় তার টাইপ ১ ডায়াবেটিস ছিল বলে মনে করা হয়। প্রায় একই সময়েই ভারতীয় চিকিৎসকগণও এই রোগটিকে শনাক্ত করেছিলেন। প্রস্রাব পিঁপড়াকে আকর্ষণ করতো তাই তাঁরা এর নাম দিয়েছিলেন মধুমেহ।

বিংশ শতাব্দীতে ইনসুলিন আবিষ্কারের পূর্বে ডায়াবেটিসের উল্লেখযোগ্য কোনো চিকিৎসা ছিল না। দুই কানাডীয় বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক ব্যানটিং ও চার্লস বেস্ট ১৯২১ ও ১৯২২ সালে ইনসুলিন পৃথক ও পরিশোধন করেন।পরবর্তীতে ১৯৪০ সালে দীর্ঘমেয়াদি সক্রিয় এনপিএইচ ইনসুলিন আবিষ্কৃত হয়।

ডায়াবেটিস – বিশ্ব ও বাংলাদেশ

১৯৮০ সালে ছিল ১০ কোটি ৮০ লাখ, ২০১৩ সালে ছিল ৩৮ কোটি ২০ লাখ এবং ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাপী ৪২ কোটি ৫০ লাখ মানুষের ডায়াবেটিস ছিল।২০১৯ সালে হিসাব অনুযায়ী ৪৬ কোটি ৩০লাখ যা প্রাপ্তবয়স্কদের ভিতর ডয়াবেটিসের বিস্তার বা সংঘটন হয়েছে যার হার ৮.৮% ছিল। ১৯৮০ সালে যা ছিল ৪.৭% টাইপ ২ মোট ডায়াবেটিস রোগীর প্রায় ৯০% কিছু উপাত্ত অনুসারে ডায়াবেটিস সংঘটন হার নারী ও পুরুষে প্রায় সমান। কিন্তু অনেক জনবসতিতে পুরুষ ডায়াবেটিস রোগীর আধিক্য লক্ষ করা যায়, যার সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে ইনসুলিন সংবেদনশীলতায় লিঙ্গ-সম্পর্কিত পার্থক্য, অতিস্থূলতা এবং অন্যান্য বিষয় যেমন, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান, মদ্যপান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে ২০২৩ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের অবস্থান থেকে অষ্টম এবং মোট রোগির সংখ্যা ১ কোটি ৩১ লাখ। একটি গভেষনায় দেখা গেছে ২০৪৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগির সংখ্যা বেড়ে ২ কোটি ২৩ লাখ হতে পারে।

বিশ্বব্যপি ডায়াবেটিস রোগির মৃতের সংখ্যা ৩০ কোটি এবং বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগির মৃতের সংখ্যা স্বাস্থ্য বিভাগ কর্মকর্তাদের মতামত অনুযায়ী, দেশে ৭০ শতাংশ মৃত্যু হচ্ছে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ বা ক্যানসারের মতো অসংক্রামক রোগে। এর মধ্যে শুধু ১০ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয় ডায়াবেটিসে।

সূচনাঃ- ডায়াবেটিস / বহুমূত্ররোগ বা ডায়াবেটিস (যা ডায়াবেটিস মেলাইটাস নামেও পরিচিত) হলো একটি গুরুতর, দীর্ঘমেয়াদি অবস্থা যেটি ঘটে যখন রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা দীর্ঘসময় ধরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে, কারণ হয় শরীর যথেষ্ট পরিমাণে বা কোনো ইনসুলিন উৎপাদন করে না অথবা উৎপাদিত ইনসুলিন কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না। উপসর্গগুলো হলো ঘনঘন প্রস্রাব (পলিউরিয়া), অত্যধিক তৃষ্ণা (পলিডিপসিয়া) এবং অত্যধিক ক্ষুধা (পলিফেজিয়া)।চিকিৎসা না করালে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিক জটিলতার মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস, হাইপার‌অসমোলার হাইপারগ্লাইসিমিক স্টেট অথবা মৃত্যু।

টাইপ-১ ডায়াবেটিসঃ

টাইপ-১ ডায়াবিটিসকে অটোইমিউন রোগ বলা হয়। অগ্ন্যাশয়ে অবস্থিত ইনসুলিন উৎপাদনকারী বিটা .কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাওয়ার ফলে যখন মানুষের শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়, সে অবস্থাকে টাইপ-১ ডায়াবেটিস বলে।

টাইপ-২ ডায়াবেটিসঃ

ডায়াবেটিস মেলিটাস টাইপ-২ (ইংরেজি: Diabetes mellitus type 2) একটি বিপাকীয় রোগ যা টাইপ-২ ডায়াবেটিস  নামেও পরিচিত। রক্তে শর্করার আধিক্য, ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ও শরীরে ইনসুলিনের আপেক্ষিক ঘাটতি প্রভৃতি এই রোগের বৈশিষ্ট্য।

ডায়াবেটিসের লক্ষন সমূহ

টাইপ-১ ডায়াবেটিস এর উপসর্গ গুলো হঠাৎ করেই দেখা দেয় বা দিতে পারে-

  • চোখে ঝাপসা দেখা
  • মাথাব্যথা
  • তীব্র তৃষ্ণা 
  • অতিরিক্ত প্রস্রাবের প্রবণতা
  • দ্রুত ওজন হ্রাস
  • প্রচণ্ড ক্ষুধা
  • অস্বাভাবিক বিরক্তি
  • বমি বমি ভাব 
  • পেটে ব্যথা
  • অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি
  • দূরবলতা ও ক্লান্তি
  • ক্ষত নিরাময়ে দেরি হওয়া ও চুলকানি
  • প্লাজমা বা রক্তরস আয়তন কমে যাওয়ায় ক্লান্তি ও দুর্বলতা দেখা দেয়
  • ডায়াবেটিসের ফলে ত্বকে বিভিন্ন রকমের ফুসকুড়ি উঠে

টাইপ-১ প্রতিরোধ ব্যবস্থাঃ-

টাইপ-১ ডায়াবেটিস ইনসুলিন ইনজেকশন গ্রহণ করে বা ইনসুলিন পাম্প বা অন্য ডিভাইস ব্যবহার করে চিকিৎসা করা হয়। বাইরে থেকে প্রয়োগ করা (ইঞ্জেকটেড) ইনসুলিন কোষে শর্করা যাতায়াতের চাবি হিসাবে কাজ করে। শরীরের কোষগুলিতে গ্লোকোজ প্রবেশ করে। অবশ্য ইনসুলিন নেওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হল কতটা ইনসুলিন নিতে হবে তা সঠিকভাবে জানা কঠিন। এর পরিমাণ অনেক কারণের উপর নির্ভর করে, যেমন-

  • খাদ্যাভাস
  • ব্যায়াম
  • মানসিক চাপ
  • আবেগ এবং সাধারণ স্বাস্থ্য

যদি কেউ অত্যধিক ইনসুলিন গ্রহণ করেন, তাহলে তার রক্তে শর্করার মাত্রা বিপজ্জনক ভাবে নিম্ন স্তরে নেমে যেতে পারে। এটিকে হাইপো-গ্লাইসেমিয়া বলা হয়। এতে জীবনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।একই ভাবে যদি প্রয়োজনের থেকে খুব কম পরিমাণ ইনসুলিন গ্রহণ করা হয় তবে রক্তে শর্করার মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু কোষগুলিতে শর্করার অভাব দেখা দেয়। একে হাইপার-গ্লাইসেমিয়া বলা হয়। এই অবস্থাতে-ও জীবনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস এর উপসর্গ গুলো ধীরে ধীরে প্রকাশিত হয় আবার অনেক সময় প্রকাশিত নাও হতে পারে তবে নিন্মরুপ –

  • তীব্র তৃষ্ণা 
  • অতিরিক্ত প্রস্রাবের প্রবণতা
  • দ্রুত হারে ওজন হ্রাস পায়
  • অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি 
  • হাতে এবং পায়ে ঝিনঝিন 
  • ক্ষত নিরাময়ে দেরি হওয়া ও চুলকানি
  • মূত্রনালীতে সংক্রমণ
  • ঝাপসা দৃষ্টি
  • মেজাজ পরিবর্তন
  • মাথাব্যথা
  • মাথা ঘোরা 
  • বগল এবং ঘাড়ের কাছে কালচে ছাপ

টাইপ-২ প্রতিরোধ ব্যবস্থাঃ-

এই ধরনের ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক করার জন্য শরীরের মধ্যে তৈরি হওয়া ইনসুলিনকে ভালোভাবে ব্যবহার করার উপায় বের করা হয়। চিকিৎসকরা খাদ্য, ব্যায়াম এবং ওজন হ্রাসের উপর জোর দেন। যদি এর পরেও রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকে, তাহলে শরীরে ইনসুলিন ব্যবহারের দক্ষতা বাড়াবার প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক।

ডায়াবেটিসে জটিলতা সমূহঃ-

  • সকল ধরনের বহুমূত্ররোগেই দীর্ঘমেয়াদি জটিলতার ঝুঁকি বাড়ে। 
  • জটিলতাগুলো সাধারণত অনেক বছর (১০-২০) বছর পরে হয়, তবে যাদের রোগ শনাক্তে বিলম্ব হয় তারা শুরুতেই জটিলতার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসতে পারে।
  • ডায়াবেটিসের ফলে রক্ত সংবহনতন্ত্রের রোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ হয়ে যায়।৭৫% ডায়াবেটিস রোগী করোনারি ধমনির রোগে মৃত্যুবরণ করে। 
  • বৃহৎ রক্তনালি সম্বন্ধীয় রোগের মধ্যে রয়েছে স্ট্রোক ও প্রান্তীয় ধমনি রোগ। 
  • ক্ষুদ্র রক্তনালিসমূহে ক্ষতির কারণে ডায়াবেটিসের যে প্রাথমিক জটিলতাসমূহ দেখা দেয় তা হলো চোখ, বৃক্ক ও স্নায়ুর ক্ষতি। 
  • দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়  অন্ধত্ব-ও হতে পারে।
  • হুমূত্ররোগের ফলে গ্লোকোমা, ছানি ও চোখের অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন নির্গত হওয়া (প্রোটিনিউরিয়া) এবং দীর্ঘস্থায়ী বৃক্কীয় রোগ হয় এবং এর ফলে ডায়ালাইসিস বা বৃক্ক প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হয়।

রোগনির্ণয়ঃ-

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যার মতে-

  • অভুক্ত অবস্থায় রক্তের গ্লোকোজের মাত্রা ≥৭.০ মি.মোল/লি. (১২৬ মি.গ্রা./ডেসি.লি.)। অন্ততপক্ষে ৮ ঘণ্টা অভুক্ত থাকার পর সকালে নাশতার পূর্বে এই পরীক্ষাটি করা হয়।
  • প্লাজমা গ্লোকোজ ≥১১.১ মি.মোল/লি. (২০০ মি.গ্রা./ডেসি.লি.) গ্লোকোজ সহনশীলতা পরীক্ষায় (OGTT) ৭৫ গ্রাম গ্লোকোজ খাওয়ানোর দুই ঘণ্টা পরে।
  • যদি উচ্চ রক্ত গ্লোকোজের উপসর্গ থাকে তাহলে দৈবাৎ রক্ত গ্লোকোজ (উপবাস অথবা আহার পরবর্তী যে-কোনো) ≥১১.১ মি.মোল/লি. (২০০ মি.গ্রা./ডেসি.লি.)
  • গ্লাইকেটেড হিমোগ্লোবিন (HbA1C) ≥৪৮ মি.মোল/মোল (≥৬.৫%)।

প্রসেস ফুড কী ও কেনো ত্যাগ করাটা জরুরী

প্রসেস ফুড হলো সেইসব খাবার যেগুলো প্রাকৃতিক অবস্থা থেকে পরিবর্তিত বা প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়াকরণ বিভিন্ন ধরণের হতে পারে, যেমনঃ ক্যানিং, ফ্রিজিং, শুকানো, পেস্টুরাইজেশন, এবং বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান এর সংযোজন।

প্রক্রিয়াজাত খাবারের মধ্যে রয়েছেঃ

  • ক্যানড ফুড
  • প্যাকেটজাত স্ন্যাক্স
  • প্রিসারভেটিভ বা সংরক্ষণ করা খাবার
  • ফাস্ট ফুড
  • সোডা ও অন্যান্য কার্বনেটেড ড্রিংকস
  • প্রসেসড মাংস (যেমনঃ সসেজ, হ্যাম, বেকন)

প্রসেসড ফুডের ক্ষতিকর প্রভাব

প্রসেসড ফুডের বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের উপর অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলে যা পরবর্তী সময়ে অনেক লক্ষন প্রতিফলিত হয়।

কিছু প্রধান ক্ষতিকর প্রভাবঃ

  • উচ্চ সোডিয়াম উপাদানঃ প্রক্রিয়াজাত খাবারে সাধারণত উচ্চ পরিমাণে সোডিয়াম বা লবণ থাকে যা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে
  • অস্বাস্থ্যকর চর্বিঃ ট্রান্স ফ্যাট এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাটে সমৃদ্ধ প্রসেসড ফুড হৃদরোগ এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • ক্যালোরি বৃদ্ধিঃ প্রসেসড ফুড সাধারণত ক্যালোরিতে ভরপুর যা উচ্চ ওজন বৃদ্ধি করে দেয়।
  • পুষ্টির অভাবঃ প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রায়শই প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান কম থাকে, যা আমাদের শরীরের সঠিক পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয়।
  • ক্যান্সারের ঝুঁকিঃ কিছু প্রসেসড ফুডের সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াকরণের ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, প্রসেসড মাংসের মধ্যে নাইট্রেট এবং নাইট্রাইট থাকে যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • হজম সমস্যাঃ প্রসেসড ফুডে ফাইবারের পরিমাণ কম থাকে যা হজম সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে।

প্রসেসড ফুড আমাদের জীবনকে সহজ করে তোলে এবং স্বাদে হয়তো ভরপুর কিন্তু তা অতিরিক্ত বা নিয়মিত গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং প্রাকৃতিক, অপ্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে গুরুত্ব দেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সর্বোত্তম।

দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের কারণে সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাবঃ

দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিম্নে দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের কারণে হতে পারে এমন কিছু ক্ষতি এবং সমস্যা উল্লেখ করা হলোঃ

সংক্রমণঃ দুর্বল ইমিউন সিস্টেম থাকলে শরীর সহজেই ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস, এবং অন্যান্য প্যাথোজেনের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। ফলে সাধারণ ঠান্ডা, ফ্লু, নিউমোনিয়া, এবং অন্যান্য সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

দীর্ঘস্থায়ী রোগঃ দুর্বল ইমিউন সিস্টেম থাকলে দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেমন ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এবং আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

আলর্জি এবং অটোইমিউন রোগঃ ইমিউন সিস্টেম দুর্বল থাকলে শরীরের নিজস্ব কোষগুলিকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে আক্রমণ করতে পারে, যা অটোইমিউন রোগের কারণ হতে পারে। এছাড়াও, বিভিন্ন ধরনের আলার্জির ঝুঁকি বেড়ে যায়।ক্যান্সারঃ ইমিউন সিস্টেম দুর্বল থাকলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে, কারণ ইমিউন সিস্টেমের প্রধান কাজগুলির মধ্যে একটি হলো শরীরে অনিয়ন্ত্রিত কোষ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়াই করা।
ঘন ঘন অসুস্থতাঃ দুর্বল ইমিউন সিস্টেম থাকলে ঘন ঘন অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে, কারণ শরীর সংক্রমণের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে না।

ক্ষত নিরাময়ে দেরি হতে পারেঃ ইমিউন সিস্টেম দুর্বল থাকলে শরীরের ক্ষত নিরাময়ে দেরি হতে পারে। ফলে ছোটখাটো আঘাতও দীর্ঘসময় ধরে থাকতে পারে এবং সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরকে কিভাবে শক্তিসশালী করা যায়

ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খানঃ ম্যাগনেসিয়াম শরীরকে সবল করতে পারে। তাই প্রায়শ ক্লান্তিতে ভুগলে খাদ্যতালিকায় ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বাড়াতে মনোযোগী হোন, যেমন- বাদাম, কলা, মসুর ডাল, ছোলা, গম, চিয়া সিড, ফ্লাক্স সিড ও বার্লি।

পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ সারাদিনে অন্তত আট গ্লাস পানি পান করুন। তৃষ্ণার্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না, কারণ আমাদের পিপাসার অ্যালার্ম সবসময় নির্ভুল নয়। এমনকি অল্প ডিহাইড্রেশনও (শারীরিক পানিশূন্যতা) ক্লান্তিতে ভোগাতে পারে। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় সীমিত করুন। কারণ কফি ও কোমল পানীয়ের ক্যাফেইন শক্তি যোগালেও দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়।

কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট খানঃ পাউরুটি, বিস্কুট ও কেক কখনোই সেরা খাবার নয় হতে পারে না। বিশেষ করে যদি নিজেকে দীর্ঘসময় সতেজ রাখতে চান কেননা এসব খাবার খেলে রক্ত শর্করার পরিমান যেমন দ্রুত বাড়বে, তেমনি দ্রুত কমে যাবে এবং যার  ফলে দুর্বলতা অনুভব করবেন। বেশি করে উচ্চ আঁশ যুক্ত খাবার খান, যা কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটে সমৃদ্ধ। উচ্চ পরিমাণে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট রয়েছে এমন কিছু খাবার হলো- গোটা শস্য ও শাকসবজি। এসব খাবার রক্ত শর্করা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

শরীরচর্চা করুনঃ প্রতিদিন কমপক্ষে ৪৫ মিনিট করে সপ্তাহে ৪/৫ দিন শরীরচর্চার চেষ্টা করুন। নিয়মিত শরীরচর্চায় শরীর সবল হয়ে ওঠে এবং রাতে ভালো ঘুম হয়, যার ফলে দিনে দুর্বলতা অনুভূত হয় না। অন্যান্য শরীরচর্চার পাশাপাশি ইয়োগা করতে পারেন বা জিমে যেতে পারেন। সময় না থাকলে বা নে পেলে নয় অন্তত সুস্থতার জন্য ৪৫ মিনিট সময় বের করুন।

পর্যাপ্ত ঘুমানোর অভ্যাসঃ প্রাপ্তবয়স্ক লোকেদের প্রতিরাতে কমপক্ষে সাত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। প্রতিদিন একই সময়ে জেগে ওঠুন, এমনকি বন্ধের দিনেও। পর্যাপ্ত ঘুমাতে রাতে তাড়াতাড়ি বিছানায় যান। এভাবে জীবনযাপন করলে দিনে তেমন ক্লান্তি অনুভূত হবে না এবং সম্ভব হলে দিনেও  ১৫-৩০ মিনিট ঘুমাতে পারেন। এটা শরীরে আরো সতেজতা এনে দেবে।রাত জাগা পরিত্যাগ করুন।

সুষম খাদ্য গ্রহন করুনঃ স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বা প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে এর কোন বিকল্প নেই।প্রচুর পরিমানে শাকসব্জি,দানাদার খাবার, অপ্রক্রিয়াজাত খাবার, সাই্ট্রাস ফল ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস করুন যাতে করে শরীরের পুষ্টির অভাব কমিয়ে ইমিউন সিস্টেম কে উন্নত করে রাখবে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ।  

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খাবার সমূহ

আমলকিঃ ভেষজ গুণে অনন্য একটি ফল আমলকি। বিভিন্ন অসুখ সারানো ছাড়াও আমলকী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে দারুণ সাহায্য করে। আমলকীর গুণাগুণের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধেও এখন আমলকীর নির্যাস ব্যবহার করা হয়। আমলকীতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, আমলকীতে পেয়ারা ও কাগজিলেবুর চেয়ে তিন গুণ ও দশ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। আমলকীতে কমলালেবুর চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে।এটি গরম পানির সঙ্গে খেতে পারেন বা খালি পেটেও খেতে পারেন। এর রসও পান করা যায়। এটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ। খালি পেটে খাওয়ার সময় অভ্যন্তরীণভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে, যা আমাদের ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

নিমপাতাঃ খালি পেটে নিমপাতা-বাটা খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। নিমের পুষ্টির তথ্যের মধ্যে – ফ্ল্যাভোনয়েড-এর উৎকৃষ্ট উৎস হচ্ছে নিম পাতা, যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর মধ্যে আছে অ্যাজাডিরাকটিন, যা একটি প্রাকৃতিক কীটনাশক। নিমের অন্যান্য উপাদানের মধ্যে আছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, বিভিন্ন আকরিক যেমন ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন সি এবং ক্যারোটিন। এছাড়া এটি ট্যামিক অ্যাসিড, প্র্যালাইন এবং অন্যান্য ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ।নিমফুলের মধ্যে পাওয়া যায় বিভিন্ন অ্যামাইনো অ্যাসিড যেমন গ্লোটামিক অ্যাসিড, টাইরোসাইন, এবং মেথিওনাইন।এ ছাড়া ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া রোধী উপাদান যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

মধুঃ যাবতীয় রোগ নিরাময়ে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মধুর গুণ অপরিসীম। মধুতে যেসব উপকরণ রয়েছে, তার মধ্যে প্রধান উপকরণ হলো সুগার বা চিনি, আর যেটা আমরা অনেকই এড়িয়ে চলি। কিন্তু মধুতে গ্লোকোজ ও ফ্রোকটোজ—এ দুটি সরাসরি মেটাবলাইজড হয়ে যায় এবং ফ্যাট হিসেবে জমা হয় না।

সাইট্রাস ফলঃ সাইট্রাস ফলগুলি চার্টের শীর্ষে আসে যখন আমরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খাওয়ার কথা বলি কারণ এগুলি ভিটামিন সি-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস, একটি অনাক্রম্যতা শক্তির খাবার৷ ভিটামিন সি শ্বেত রক্ত কণিকার (WBC) উৎপাদন বাড়ায়, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন সি বেশিরভাগ টক, সাইট্রাস ফলের মধ্যে পাওয়া যায়, তাই ঠান্ডা এবং কাশির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আপনার খাবারে যোগ করার জন্য প্রচুর বিকল্প রয়েছে। কিছু সাধারণ সাইট্রাস ফলের মধ্যে রয়েছে – লেবু, কমলালেবু, জাম্বুরা, ট্যানজারিনস।

হলুদঃ হলুদ হল ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সব ধরনের রান্নায় ব্যবহৃত একটি অপরিহার্য মসলা। আপনি কি জানেন যে এটি অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা দেয়? হলুদের পুষ্টিগুনের মধ্যে – Turmeric nutrition facts in Bengali

হলুদে আছে 26% ম্যাঙ্গানিজ এবং 16% লোহা। এটি তন্তু, ভাইটামিন B6, পটাসিয়াম, ভাইটামিন C এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ। এর মধ্যে রাসায়নিক যৌগ কারকিউমিন থাকার কারণে হলুদের মধ্যে ভেষজ গুণ আছে বলে ধরা হয়। এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে এবং এটি প্রদাহরোধী এজেন্ট। আরো রয়েছে 0.9 গ্রাম প্রোটিন, 4 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, 2.1 গ্রাম ফাইবার, 0.3 গ্রাম চর্বি, 196 মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, 5.17 মিলিগ্রাম আয়রন।হলুদে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানগুলো বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সাহায্য করে।হলুদ তার প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্যও পরিচিত, যা অস্টিওআর্থারাইটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত অনেক রোগীদের জন্য উপকারী। এইভাবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলুদ যোগ করা খাবার অনেক সাহায্য করতে পারে।

ব্রোকলিঃ ব্রোকলি হল একটি সাধারণ সবুজ (ফুল কপি) সবজি, যা ভিটামিন সি-এর আরেকটি বড় উৎস। এটি ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই-এর সাথে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ। ব্রোকলির পুস্টিগুনের মধ্যে আছে – এক কাপ কাঁচা ব্রকলিতে (৯১ গ্রাম) আছে ৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২ দশমিক ৬ গ্রাম প্রোটিন, শূন্য দশমিক ৩ গ্রাম ফ্যাট, ২ দশমিক ৪ গ্রাম ফাইবার। আর রয়েছে দৈনন্দিন চাহিদার ১৩৫ শতাংশ ভিটামিন সি, ১১৬ শতাংশ ভিটামিন কে, ১৪ শতাংশ ভিটামিন বি৯ (ফোলেট), ১১ শতাংশ ভিটামিন এ, ৮ শতাংশ পটাশিয়াম, ৬ শতাংশ ফসফরাস, ৩ শতাংশ সেলেনিয়াম।এইভাবে, ব্রকলি হল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সেরা খাবারগুলির মধ্যে একটি। নিয়মিত ব্রোকলি খাওয়া শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই উন্নত করতে পারে না বরং অন্ত্রের স্বাস্থ্যও ভালো রাখতে পারে।

দইঃ দই হল সবচেয়ে বেশি খাওয়া খাবার যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সাথে যুক্ত। এটি ল্যাকটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ এবং এটি ভিটামিন ডি-এর একটি চমৎকার উৎসও হতে পারে।দই এর পুস্টিগিনের মধ্য রয়েছে প্রতি 100 গ্রাম দইতে 61 কিলোক্যালরি, 4.7 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, 3.5 গ্রাম প্রোটিন এবং 3.3 গ্রাম ফ্যাট থাকে। এছাড়া দইয়ের ৮১ শতাংশই পানি। দইয়ে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি-12, জিঙ্ক এবং ফসফরাস তাই, দই খাওয়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে এবং বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও বাড়ায়। সাধারণ দই বা দই খাওয়া হল সবথেকে ভালো উপায় যে আপনি এর সব সুবিধা পাচ্ছেন। 

পালং শাকঃ পালং শাক হল আরেকটি সাধারণ সবুজ শাক যার মধ্যে অনেকগুলি প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে – প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে প্রোটিন আছে ২.০ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট আছে ২.৮ গ্রাম, আঁশ আছে ০.৭ গ্রাম, আয়রন ১১.২ মি. গ্রাম, ফসফরাস আছে ২০.৩ মি. এছাড়াও, ভিটামিন এ,  ভিটামিন সি, ভিটামিন ই,  বিটা-ক্যারোটিন, এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস।সুতরাং, আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পালং শাক অন্তর্ভুক্ত করা একটি বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত কারণ এটি ইমিউন সিস্টেমের জন্য সর্বোত্তম খাদ্য এবং এছাড়াও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি চোখ এবং ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য শরীরের ক্ষমতা উন্নত করে।

আদাঃ যারা সাধারণ সর্দি-কাশিতে ভুগছেন তারা প্রায়শই কিছুটা উপশম পেতে আদা ব্যবহার করেন।আদার পুস্টিগু এর মধ্য রয়েছে প্রতি ১০০ গ্রামে – 79 ক্যালোরি, 17.86 কার্বোহাইড্রেট, 3.6 গ্রাম ভোজ্য ফাইবার, 3.57 গ্রাম প্রোটিন, 33 মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, 1.15 গ্রাম আয়রন, 14 মিলিগ্রাম সোডিয়াম, 7.7 মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। এছাড়াও ভিটামিন B6, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ফসফরাস, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন এবং ফোলেট রস্টিগুন।এটি আদার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যের কারণে, যা গলা ব্যথা উপসর্গের পাশাপাশি নির্দিষ্ট প্রদাহজনক সংক্রমণ উপশম করতে সাহায্য করে। আদা অনাক্রম্যতা বাড়াতে সুপার ফুড আইটেমগুলির মধ্যে একটি, এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং এমনকি কোলেস্টেরল-হ্রাসকারী বৈশিষ্ট্যও থাকতে পারে।

রসুনঃ প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় রসুনের ব্যবহার চলে এসেছে। রসুনের মধ্যে পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম‚ কপার‚ পটাশিয়াম‚ ফসফরাস‚ আয়রন ও ভিটামিন বি ওয়ান।রসুন অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। যা প্রাকৃতিক ভাবে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।এছাড়াও রসুন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হার্ট ও ফুসফুস কে ভালো রাখতে সাহায্য করে রসুন।রসুন খাবারের খাবারে একটি স্বতন্ত্র গন্ধ যোগ করে, তবে এটি প্রাচীনকালে ঔষধি গুণাবলীর জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে রয়েছে 4.5 ক্যালোরি, 0.2 গ্রাম প্রোটিন এবং 1 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট।এটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার সম্পত্তির জন্য পরিচিত এবং সাধারণ সর্দি-কাশির জন্য একটি সাধারণ ঘরোয়া প্রতিকারও। সুতরাং, রসুন এর অনাক্রম্যতা-বর্ধক বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।সকালে খালি পেটে রসুন খেলে এই রকম অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ১- ২ কোয়া রসুন উষ্ণ গরম জলের সাথে খাওয়া যেতে পারে।

গ্রীন টিঃ গ্রীন টি’তে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ইসিজিসি-এর ভালো ঘনত্ব রয়েছে, যা দুই ধরনের চমৎকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ইসিজিসি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিতে অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য পাওয়া গেছে। গ্রীন টি’তে বিভিন্ন এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ২৭ ধরনের মিনারেল রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে – গ্রীন টি এর পুস্টিগুনের মধ্যে রয়েছে ক্যালোরি: ২.৪৫ কিলোজুল, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট: 0 গ্রাম, প্রোটিন: ০.৫ গ্রাম এছাড়াও ভিটামিন এ, বি, ডি, ই, সি, ই, এইচ ক্রোমিয়াম, জিঙ্ক, ক্যাফেইন এবং ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়ামসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া প্রসাধনীতেও গ্রীন টি এর ব্যবহার দেখা যায়। সাধারণত আমরা ‘সবুজ চা’কে ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পানীয় হিসেবেও জানি।

সূর্য্যমুখী বীজঃ সূর্য্যমুখী বীজ প্রাতঃরাশের সিরিয়ালগুলিতে একটি দুর্দান্ত সংযোজন তৈরি করে এবং এটি একাধিক পুষ্টির আরেকটি দুর্দান্ত উত্স, যার মধ্যে রয়েছে – 20% প্রোটিন, 35-42% তেল এবং 31% অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এছাড়া ভিটামিন এ, বি৩, বি৫, বি৬,ভিটামিন ই, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম এবং ফোলেট রয়েছে। এইভাবে, সূর্যমুখী বীজ বিনামূল্যে ফ্রী রেডিকেলগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

বাদামঃ বাদাম অসম্পৃক্ত বা স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ভিটামিন ই এর অন্যতম সেরা উৎস। বাদামে ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ফাইবার সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিও রয়েছে। নিয়মিত বাদাম খাওয়া মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতা বাড়াতেও পরিচিত।

পোল্ট্রিঃ মুরগির মাংস এবং ডিমের মতো পোল্ট্রি পণ্যগুলি প্রোটিনের সেরা উত্সগুলির মধ্যে একটি হলেও এগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সহায়তা করে এবং ভিটামিন বি 6 এর মতো পুষ্টি ধারণ করে। ভিটামিন B6 কিছু গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক প্রক্রিয়া এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি নতুন এবং স্বাস্থ্যকর লোহিত রক্তকণিকা (RBCs) তৈরিতেও অপরিহার্য। উপরন্তু, মুরগির হাড় সিদ্ধ করে তৈরি স্টক বা ঝোলের মধ্যে জেলটিন এবং কনড্রয়েটিনের মতো পুষ্টি থাকে যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পোল্ট্রি পণ্যগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শীর্ষ খাবারগুলির মধ্যে একটি।

কিউইঃ সাইট্রাস ফলের মতো, কিউই হল ভিটামিন সি-এর আরেকটি চমৎকার উৎস এবং সবচেয়ে ভালো খাবারের মধ্যে রয়েছে যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং সাধারণ সর্দি-কাশির উপসর্গ কমিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

পেঁপেঃ পেঁপে হল ভিটামিন-সি-সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে আরেকটি, যেটিতে দৈনিক প্রস্তাবিত পরিমাণের প্রায় 100% ভিটামিন সি রয়েছে। পেঁপে একটি নির্দিষ্ট যৌগের উপস্থিতির কারণে কার্যকর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যের জন্যও পরিচিত। . Papain নামে পরিচিত, যা এক ধরনের পাচক এনজাইম। পেঁপেতে কিছু পরিমাণে অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেমন ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ফোলেট রয়েছে, যা সামগ্রিক সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, যা এগুলিকে সেরা অনাক্রম্যতা বৃদ্ধিকারী খাবারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে।

ব্লোবেরিঃ ব্লোবেরি হল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খাবারের মধ্যে যা ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং ফ্রি র‌্যাডিক্যালগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে, যার ফলে কার্যকরভাবে বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনা হ্রাস করে। ব্লোবেরিতে ফ্ল্যাভোনয়েডও থাকে, যা শ্বাসযন্ত্রের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এইভাবে, ব্লোবেরি খাওয়া উপরের শ্বাসযন্ত্রের রোগ এবং সাধারণ সর্দি এবং কাশির মতো সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করবে। আরো খেতে পারেন মেথি, শজনে পাতা।

ISO TONIC IMMUNE BOOSTER কেনো সেবন করবেন

কথায় আছে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তাই বলবো স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে গিয়ে যে সব খাবার খাচ্ছি তা কতটা আমাদের শরীরে পুষ্টি দিচ্ছে তার কতটাই আমরা অবগত। আপনি কি জানেন, প্রতিদিন যে খাবার খাই তা হতে কোন পুষ্টি কতটুকু দরকার? পুষ্টি ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে যার ফলে আমাদের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন কে দিন কমে যাচ্ছে এবং আমরা অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পরছি। অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন রোগের জন্য বিভিন্ন ঔষধ খেয়ে হয়তোবা সুস্থ হচ্ছি কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকরনে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছি। তাই অনেক গভেষণা হতে বলা হচ্ছে ঔষধ নয়, প্রাকৃতিক খাদ্যই মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সুস্থ রাখতে পারে। এ কারনে পুষ্টি ঘাটতি পূরণের জন্য আমাদের দীর্ঘ ৯ বছরের গভেষণায় ও সম্পূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত প্রকৃতিক উপাদানে তৈরিকৃত ISO TONIC IMMUNE BOOSTER যা দেহের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে ইনশা-আল্লাহ।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন “এ” ভিটামিন “ডি” ভিটামিন “ই” ভিটামিনে “কে” এবং  ভিটামিন “সি” “অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট” “ মিনারেলস এর ম্যাগনেসিয়াম” “জিঙ্ক” “পটাশিয়াম” “সেলেনিয়াম” ইত্যাদি এগুলো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলসের ভূমিকাঃ

  • ভিটামিন A যুক্ত  খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখে।
  • ভিটামিন D  হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন C অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ভিটামিন সি শ্বেত রক্তকণিকা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • ভিটামিন E  কোষের  ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। 
  • ভিটামিন K রক্ত জমাট বাঁধতে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
  • ম্যাগনেসিয়াম  মেটাবলিজমে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • জিঙ্ক কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • পটাসিয়াম শরীরের তরল সমতা বজায় রাখে এবং স্নায়ুর কার্যকারিতা উন্নত করে।
  • সেলেনিয়াম শরীরে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসাবে কাজ করে যা হার্ট অ্যাটাক, হাঁপানি, ক্যানসার এর মতো রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

প্রাকৃতিক খাবার থেকেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়। যা বিভিন্ন শাক-সব্জি, ভিটামিন “সি” যুক্ত খাবার, দানাদার খাবার, অপ্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাইবার যুক্ত খাবার এবং জীবন ধারার পরিবর্তন আপনাকে রাখবে সুস্থ ও কর্মক্ষম। যেহেতু এতোসব ব্যালেন্স সবাই করতে পারেনা তাই বিভিন্ন গভেষনা এবং আমাদের অনেকদিনের প্রচেষ্টায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা  বৃদ্ধি করনে নিয়ে আসলাম “ISO TONIC IMMUNE BOOSTERএটি একটি প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ মিশ্রণ, যা আপনার শরীরের জন্য নানা রকমের উপকার নিয়ে আসে। নিচে ইসো টনিক ইমিউন বুস্টারের উপকারিতা এক পলকে-

  • “ISO TONIC IMMUNE BOOSTER” এ  থাকা উপাদানগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
  • ইহা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
  • প্রাকৃতিক উপাদানগুলির কারণে এই মিশ্রণ সেবনে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং ক্লান্তি দূর হয়।
  • প্রদাহনাশক উপাদানগুলির কারনে শরীরের প্রদাহ কমিয়ে দেয়।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ফলে শরীর কে  বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান থেকে রক্ষা করে।
  • মিশ্রনটিতে উচ্চমাত্রায় ভিটামেন্স ও মিনারেলস এর ভালো সরবরাহ থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও শরীরকে শক্তিশালী করে।
  • রক্তে শর্করার মাত্রাকে  নিয়ন্ত্রণ করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • ক্যান্সারের কোষ প্রতিরোধক হিসেব কাজ করে।

“ISO TONIC IMMUNE BOOSTER একটি সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী মিশ্রণ যা নিয়মিত সেবনে শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সহায়ক।

লাল চালের পুষ্টি উপাদান

১ কাপ অর্থাৎ ২০০ গ্রাম লাল চালের পুষ্টি উপাদান

পুষ্টি উপাদানপরিমান
ক্যালোরি 222 গ্রাম
প্রোটিন8.89 গ্রাম
ফ্যাট 1.8 গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট 46 গ্রাম
ফাইবার3.6 গ্রাম
চিনি 0 গ্রাম
ক্যালসিয়াম6 মিলিগ্রাম
আয়রন1.11 মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম86 মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম86 মিলিগ্রাম
জিঙ্ক 1.2 মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৬0.2 মিলিগ্রাম
ভিটামিন “ই” 0.2 মিলিগ্রাম
সেলেনিয়াম30 মাইক্রোগ্রাম
সোডিয়াম67 গ্রাম

লাল চালের স্বাস্থ্য উপকারিতা

লাল চাল হল একটি স্বাস্থ্যকর সংযোজন এবং যা সাদা চালের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন।

  •  হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে
  • কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে
  • হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী
  • হাঁপানির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে
  • ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে

হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করেঃ লাল চালের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি হজম করা সহজ।উচ্চ ফাইবারের কারনে ইহা হজম সংক্রান্ত সমস্যা প্রতিরোধ করে বিধায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর ভুমিকা রাখে। লাল চাল আপনার শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে এবং একটি সুস্থ অন্ত্রের প্রচার করে। আপনি ওজন কমানোর জন্য লাল চালের উপকারিতাও অনুভব করতে পারেন কারণ এটি আপনাকে দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে তাই অতিরিক্ত খেতে হয় না।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেোঃ আপনার খাবারে  লাল চাল যোগ করা মানে হলো আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকরন, সংক্রমণ এবং অসুস্থতার বিরুদ্ধে আপনার শরীরের প্রতিরক্ষা গড়ে তোলার একটি চমৎকার উপায়। একটি শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম একটি  সুস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারেঃ লাল চালে থাকা ম্যাগনেসিয়াম হৃদয়ের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং সামগ্রিক হৃদরোগের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। সুতরাং, হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি স্বাস্থ্যকর খাবার।

কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করেঃ লাল চাল একটি ধীর গতির কার্বোহাইড্রেটের উৎস, যা দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি সরবরাহ করে এবং রক্তের শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে আর রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার উপাদান যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে। এই কোলেস্টেরল অনেক রোগ উৎপত্তির কারন তা কি জানেন?

হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালোঃ লাল চালে উপস্থিত কিছু প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেমন ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস আপনার হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সুতরাং, আপনি যদি এমন কেউ হন যিনি হাড় সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন বা হাড়ের ঘনত্ব কম, লাল চাল অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে আপনার জন্য।

হাঁপানির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করেঃ লাল চালের একটি কম পরিচিত সুবিধা হল যে এটি আপনাকে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের ধরণ বজায় রাখতে এবং ফুসফুসের রোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। নিয়মিত এই পুষ্টিকর ভাত খাওয়া শরীরে অক্সিজেন সঞ্চালন উন্নত করতে পারে এবং হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করতে ব্যাপক সাহায্য করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করেঃ আপনি যদি উজ্জ্বল ত্বক পেতে চান তবে লাল চাল হতে পারে আপনার সবচেয়ে বড় মিত্র। কারণ লাল চালে রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিন, একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনাকে নরম এবং কোমল ত্বক পেতে সাহায্য করতে পারে। আরও কী, এটি লাল রক্ত ​​​​কোষ তৈরি করতে সহায়তা করে যা ত্বককে সুস্থ রাখতে এবং অকাল বার্ধক্যের প্রক্রিয়াটিকে ধীর করার জন্য দায়ী। এইভাবে, ত্বকের জন্য লাল চালের উপকারিতা এমন কিছু যা আপনি উপেক্ষা করতে পারবেন না।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারেঃ যেহেতু লাল চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজ ছেড়ে দিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে পারে তাই এটি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য একটি ভাল পছন্দ। এটি তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে সুতরাং, এটি সাদা ভাতের একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প এবং অস্বাভাবিক রক্তে শর্করার মাত্রাযুক্ত লোকেদের জন্য আরও উপযুক্ত। এই স্বাস্থ্যকর খাবারের সাথেই থাকুন,ডায়াবেটিস মুক্ত থাকুন।

আপনার প্রতিদিনের খাবারের নিয়মাবলী

ঘুম থেকে উঠার পরঃ মধু মিশ্রিত গরম পানি। সাথে দিতে পারেন  ISO TONIC  হতে ১ চামুচ ইমিউন বুস্টার পাউডার।

সকালের নাস্তাঃ রুটি, সবজি, ডিম সেদ্ধ ইত্যাদি।

মধ্য দুপুরের খাবারঃ যে কোন একটি মিষ্টি ফল ( আম, কলা, কমলেবু ইত্যাদি), সেই সাথে টক জাতীয় ফল বা দেশীয় ফল।

দুপুরের খাবারঃ ভাত, ডাল, সবজি/ শাক, মাছ/ মাংস, সঙ্গে সালাদ বা টক দই।

বিকালের নাস্তাঃ বিভিন্ন ধরনের বাদাম, ছোলা, বিস্কুট এবং চিনি ছাড়া চা অথবা কফি।

রাতের খাবারঃ ভাত/রুটি, সবজি, মাছ/ মাংস ডাল ইত্যাদি।

ঘুমানোর আগেঃ এক গ্লাস ননি মুক্ত দুধ। সেই দুধের সাথে ISO TONIC IMMUNE BOOSTER হতে ১ চামুচ ইমিউন বুস্টার পাউডার।

অবশ্যই ঘুমাতে যাওয়ার দুই থেকে তিন ঘন্টা আগে রাতের খাবার শেষ করতে হবে।

রুটির জন্য বেছে নিন লাল আটা। ভাতের জন্য লাল চাল (লাল চালে পাওয়া খনিজগুলির মধ্যে ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। লাল চালে ফাইবার বেশি থাকে। এটিতে মাঝারি পরিমাণে প্রোটিনও রয়েছে) পাওয়া গেলে খুবই ভালো। সেটা না পেলেও যাঁদের ওজন বেশি কিংবা ডায়াবেটিস রয়েছে, তাঁরা মোটা চাল বেছে নিন, যা রান্না করার জন্য একটু বেশি সময় লাগে।

সুস্থ্যতা যে মহান আল্লাহর নিয়ামত এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন সূরা বাকারা-২৪৭- ‘আল্লাহ অবশ্যই তাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে জ্ঞান ও স্বাস্থ্যে সমৃদ্ধ করেছেন । সহীহ্ বুখারীর একটি হাদীসে পাওয়া যায়, দুটি নিয়ামত প্রসঙ্গে মানুষ অনেক ক্ষতির মাঝে থাকে – সুস্থ্যতা এবং অবসর।

যে ব্যক্তিটি হসপিটালে কাতরাচ্ছে সেই বুঝে সুস্থ্যতার নেয়ামত।
তাই সুস্থ থাকতে হলে আমাদের প্রকৃতিতে ফিরতে হবে। প্রকৃতিতে ছড়ানো ছিটানো খাবার এবং জীবন ধারার পরিবর্তন-ই করতে ও রাখতে পারে সুস্থ্য

তাই সুস্থ থাকতে হলে আমাদের প্রকৃতিতে ফিরতে হবে। প্রকৃতিতে ছড়ানো ছিটানো খাবার এবং জীবন ধারার পরিবর্তন-ই করতে ও রাখতে পারে সুস্থ্য

error: Content is protected !!